একটা ছোট্ট দ্বীপে সমস্ত আবেগ -অনুভূতিরা একসাথে বাস করত । একদিন হঠাত খবর এলো সেই দ্বীপটি ডুবে যাবে !
তা জেনে সব আবেগ -অনুভূতিরা সেই দ্বীপটি ছেড়ে কোনো নিরাপদ স্থানে বিপদ ঘটার আগেই সড়ে পরবে ঠিক করল ! আর সেইমতো তারা সবরকম আয়োজন করে নিজের -নিজের নৌকো ভাসিয়ে দিল নীল জলের বুকে নিরাপদ আশ্রয়ের উদ্দ্যেশ্যে ; শুধু বাকি থাকল ভালবাসা --- কারণ সে শেষ মুহুর্তের খারাপ সময়ে এতদিনের সঙ্গী প্রিয় বাসস্থানটিকে একা ছাড়তে চায়ল না ... দ্বীপটির বারবার বারণ সত্ত্বেও সে নিজেকে বিপদের মুখে ফেলেও তার পাশে পরে রইল একা ... কারো কোনো তওয়াক্কা না করে । শেষমেশ যখন দ্বীপটি পুরপুরি ডুবে গেল ... অনেক চেষ্টা করেও ভালবাসা তাকে বাঁচাতে পারল না তখন নিজেও জলে সাঁতরাতে লাগল , অনেকটা সাঁতরে তার অন্য বন্ধুদের আগেই ভাসিয়ে দেওয়া নৌকোগুলোর হদিশ পেল আর প্রথমেই গিয়ে উঠল 'আত্ম-অহঙ্কার '-এর ডিঙ্গিতে । দুজনে সেই নৌকোয় দিব্বি যেতে পারত যদি না বাদ সাধত ঐ নৌকোয় আত্ম -অহংকারের অকারণে অহেতুক জমিয়ে রাখা কিছু নিতান্তই অপ্রয়োজনীয় জিনিস ... তাতে নৌকোটা এত ভারী হয়ে গেছিল যে ভালবাসার ঐখানে আর জায়গা হচ্ছিল না আর নৌকোটাও ডুবে যাচ্ছিল । ভালবাসার বলা সত্ত্বেও আত্ম -অহংকার সেগুলো ফেলল না কিছুতেই আর বাধ্য হয়েই ভালোবাসাকে আবার জলে ঝাঁপাতে হল ... নইলে যে দুজনেই ডুবত !
এরপর একে -একে 'সুখ ' তার নিজের আনন্দে-হাসিতে এতই খুশী যে ভালবাসার ডাকই শুনতে পেলনা , 'দুঃখ ' তার কান্নাতে এতই মত্ত যে ভালবাসার ডাক শুনেও শুনতে চাইল না, 'লাভ ' তো চিরকালের লোভী ...ভালোবাসাকে নিজের নৌকই চড়ানই নিজের লোকসান দেখল তাই সরাসরি মুখের উপরেই না করে দিল , 'দয়া ' শুধু মায়া-করুণা দেখালো কিন্তু কাজের কাজ কিছুই করলো না , 'ত্যাগ ' তাকে এরম সময়েও নৌকই উঠতে অপেক্ষা করতে বলল ; আর এধরনের নানা অজুহাতে চেয়ে -চেয়েও ভালবাসার স্থান হলো না বাকি সবার কাছে ! সবার কাছেই সে এতটাই অপ্রয়োজনীয় .... অনাহূত যে সবার কাছেই ব্রাত্য ... কেউ এই দায় বইতে নারাজ ... সে বুঝতেই পারছিল না যে তার দোষটা কি ?... যাদের জন্য সে এক সময় নিঃস্বার্থ মনে অনেক কিছু করে গেছে প্রতিনিয়ত ... এখনো করতে চায় নিজের কথা না ভেবেই শুধু তাদের ভালোর জন্যই ,তবু তারা সবাই কেন এমন করছে তার সাথে ? খারাপ লাগল তার তবুও কাউকে দোষ দিল না সে ,অভিশাপ তো নয়ই ... কিন্তু , সে এখন ঠিক কি করবে ... বাঁচার জন্য কি করা উচিত তার যখন সে জানেই না ঠিক তখনই দেবদূতের মতো এক বৃদ্ধ না চায়তেই তাকে নিজের ছোট্ট ডিঙ্গিতে নিজে থেকেই আশ্রয় দিলেন আর নিরাপদ আশ্রয়ে পৌঁছে দিলেন । কিন্তু , ভালবাসার তাঁকে ধন্যবাদ জানানোর আগেই তিনি কোথায় যেন জলদি গায়েব হয়ে গেলেন ! ভালবাসা তখন সেখানে এক বয়স্কা মহিলাকে সেই বৃদ্ধের খোঁজ করায় সেই মহিলা বললেন যে তিনি হলেন 'আত্ম -চেতনা' আর ঐ বৃদ্ধ টি ছিলেন 'সময়' --- যিনি কখনও কোন কিছুর জন্য , কারো জন্যেই থামেন না আর একবার চলে গেলে ফিরেও আসেন না ... তাই অত জলদি গায়েব হয়ে গেছেন ! তাহলে উনি কেন আশ্রয় দিলেন , কেন বাঁচালেন ভালোবাসাকে মৃত্যুর মুখ থেকে ? --- এই প্রশ্নের উত্তরে 'আত্ম -চেতনা' মৃদু হেসে জবাব দিলেন --- ''... কারণ , 'সময়'ই যে একমাত্র 'ভালবাসা'র সঠিক মূল্য দিতে জানে ।"
"...সময় বোঝে validity-র মানে / পুনশ্চটা বাতিল করে নিস ...!!!"
[সৌজন্যে :-'আনন্দবাজার পত্রিকা ']
তা জেনে সব আবেগ -অনুভূতিরা সেই দ্বীপটি ছেড়ে কোনো নিরাপদ স্থানে বিপদ ঘটার আগেই সড়ে পরবে ঠিক করল ! আর সেইমতো তারা সবরকম আয়োজন করে নিজের -নিজের নৌকো ভাসিয়ে দিল নীল জলের বুকে নিরাপদ আশ্রয়ের উদ্দ্যেশ্যে ; শুধু বাকি থাকল ভালবাসা --- কারণ সে শেষ মুহুর্তের খারাপ সময়ে এতদিনের সঙ্গী প্রিয় বাসস্থানটিকে একা ছাড়তে চায়ল না ... দ্বীপটির বারবার বারণ সত্ত্বেও সে নিজেকে বিপদের মুখে ফেলেও তার পাশে পরে রইল একা ... কারো কোনো তওয়াক্কা না করে । শেষমেশ যখন দ্বীপটি পুরপুরি ডুবে গেল ... অনেক চেষ্টা করেও ভালবাসা তাকে বাঁচাতে পারল না তখন নিজেও জলে সাঁতরাতে লাগল , অনেকটা সাঁতরে তার অন্য বন্ধুদের আগেই ভাসিয়ে দেওয়া নৌকোগুলোর হদিশ পেল আর প্রথমেই গিয়ে উঠল 'আত্ম-অহঙ্কার '-এর ডিঙ্গিতে । দুজনে সেই নৌকোয় দিব্বি যেতে পারত যদি না বাদ সাধত ঐ নৌকোয় আত্ম -অহংকারের অকারণে অহেতুক জমিয়ে রাখা কিছু নিতান্তই অপ্রয়োজনীয় জিনিস ... তাতে নৌকোটা এত ভারী হয়ে গেছিল যে ভালবাসার ঐখানে আর জায়গা হচ্ছিল না আর নৌকোটাও ডুবে যাচ্ছিল । ভালবাসার বলা সত্ত্বেও আত্ম -অহংকার সেগুলো ফেলল না কিছুতেই আর বাধ্য হয়েই ভালোবাসাকে আবার জলে ঝাঁপাতে হল ... নইলে যে দুজনেই ডুবত !
এরপর একে -একে 'সুখ ' তার নিজের আনন্দে-হাসিতে এতই খুশী যে ভালবাসার ডাকই শুনতে পেলনা , 'দুঃখ ' তার কান্নাতে এতই মত্ত যে ভালবাসার ডাক শুনেও শুনতে চাইল না, 'লাভ ' তো চিরকালের লোভী ...ভালোবাসাকে নিজের নৌকই চড়ানই নিজের লোকসান দেখল তাই সরাসরি মুখের উপরেই না করে দিল , 'দয়া ' শুধু মায়া-করুণা দেখালো কিন্তু কাজের কাজ কিছুই করলো না , 'ত্যাগ ' তাকে এরম সময়েও নৌকই উঠতে অপেক্ষা করতে বলল ; আর এধরনের নানা অজুহাতে চেয়ে -চেয়েও ভালবাসার স্থান হলো না বাকি সবার কাছে ! সবার কাছেই সে এতটাই অপ্রয়োজনীয় .... অনাহূত যে সবার কাছেই ব্রাত্য ... কেউ এই দায় বইতে নারাজ ... সে বুঝতেই পারছিল না যে তার দোষটা কি ?... যাদের জন্য সে এক সময় নিঃস্বার্থ মনে অনেক কিছু করে গেছে প্রতিনিয়ত ... এখনো করতে চায় নিজের কথা না ভেবেই শুধু তাদের ভালোর জন্যই ,তবু তারা সবাই কেন এমন করছে তার সাথে ? খারাপ লাগল তার তবুও কাউকে দোষ দিল না সে ,অভিশাপ তো নয়ই ... কিন্তু , সে এখন ঠিক কি করবে ... বাঁচার জন্য কি করা উচিত তার যখন সে জানেই না ঠিক তখনই দেবদূতের মতো এক বৃদ্ধ না চায়তেই তাকে নিজের ছোট্ট ডিঙ্গিতে নিজে থেকেই আশ্রয় দিলেন আর নিরাপদ আশ্রয়ে পৌঁছে দিলেন । কিন্তু , ভালবাসার তাঁকে ধন্যবাদ জানানোর আগেই তিনি কোথায় যেন জলদি গায়েব হয়ে গেলেন ! ভালবাসা তখন সেখানে এক বয়স্কা মহিলাকে সেই বৃদ্ধের খোঁজ করায় সেই মহিলা বললেন যে তিনি হলেন 'আত্ম -চেতনা' আর ঐ বৃদ্ধ টি ছিলেন 'সময়' --- যিনি কখনও কোন কিছুর জন্য , কারো জন্যেই থামেন না আর একবার চলে গেলে ফিরেও আসেন না ... তাই অত জলদি গায়েব হয়ে গেছেন ! তাহলে উনি কেন আশ্রয় দিলেন , কেন বাঁচালেন ভালোবাসাকে মৃত্যুর মুখ থেকে ? --- এই প্রশ্নের উত্তরে 'আত্ম -চেতনা' মৃদু হেসে জবাব দিলেন --- ''... কারণ , 'সময়'ই যে একমাত্র 'ভালবাসা'র সঠিক মূল্য দিতে জানে ।"
"...সময় বোঝে validity-র মানে / পুনশ্চটা বাতিল করে নিস ...!!!"
[সৌজন্যে :-'আনন্দবাজার পত্রিকা ']